‘মাটির ঘর’(Matir Ghor Restaurant,Gazipur) -এ দ্বি-প্রহরের খাদ্য ও প্রকৃতি বিলাস
বাইরে মধ্য ভাদ্র মাসের তাল পাকা গরম। মন ও শরীর দুটোই প্রায় অকেজো। এই সময় গিন্নি এসে বায়না ধরলো, বাইরে কোথাও থেকে ঘুরে আসার। সারাদিনের জন্য। সর্বজান্তা গুগলের কাছে তথ্য চাইলাম। গুগল এক নিমিষেই ঢাকার আশে পাশের সব জায়গার তথ্য এনে দিলো। সাবাস ব্যাটা ! ঘন্টা খানেক গোটা তিনেক সিগারেট শেষ করে অবশেষে মাটির ঘর নামক একটা ভোজনালয়ের খোঁজ মিললো। ঢাকার কাছেই, গাজীপুরে। কয়েকটা ছবি ও ভিডিও দেখে পটে গেলাম। না, জায়গাটা ভালই, পেট-পূজাও করা যাবে আর সাথে বোনাস হিসাবে সবুজ প্রকৃতির মাঝে অবগাহন তো আছেই।
মাটির ঘরের প্রবেশদ্বার |
খাবারের মেনুতেও বেশ বৈচিত্র আছে-বাঁশফুল চালের ভাত,হরেক রকমের ভর্তা,পুলি,শুঁটকি ভূনা,পাতিহাঁস ভূনা ইত্যাদি..ইত্যাদি। মাটির থালা-বাসনে পরিবেশন করা হয়। মনের চোখেই দেখতে পেলাম আমার পরিতৃপ্ত মুখখানা। খালি পেটেই একটা লম্বা ঢেঁকুর এলো।
গুগল ম্যাপে রাস্তা মাপলাম। কারে লাগবে ঘন্টা দেড়েক। এক পেইজে একটা মোবাইল নম্বর দেখলাম। দিলাম লাইন লাগাইয়া। যা যা জানার দরকার প্রায় সবই জানা গেলো। ফোনের ওপাশের ভদ্রলোকটির গলা বেশ অমায়িক। কথা-বার্তা বন্ধুসূলভ । খুব সুন্দর করে রাস্তা ঘাটের কোনা কানচি বাতলে দিলেন। পানজোড়ার মোড়,কালীগন্জ,গাজিপুর। কাঞ্চন ব্রীজের কাছে এসে ইজি-বাইক নিতে হবে।
শুক্রবার । এগারও টার দিকে বাচ্চা-কাচ্চা ও গিন্নিসহ বাড়ির সামনে দাড়ালাম। উবারের ড্রাইভারের জন্য অপেক্ষা। আমাদের সাথে যাবে আমার শ্যালিকা রাহা, শ্যালিকার অধাংগ অভি ও তাদের সাত মাসের মেয়ে রাহামা। বাসার বাইরে দাড়িয়ে কুলকুল করে ঘামছি। আমার গাড়ির দেখা নাই। ইতিমধ্যে শ্যালিকার গাড়ি এসে হাজির। আমার গাড়ির কোন খবর নাই। ফোনে বলছে আসতাছি স্যার। কিন্তুু,‘ আসি আসি বলে জোসনা ফাঁকি দিয়াছে’। এদিকে ঘড়ির কাঁটা দুপুর ১২ টা ছুঁই ছুই। দিলাম ব্যাটারে ঘ্যাচাং করে ক্যানসেল করে।
শ্যালিকার গাড়ি নিয়ে অতপর: রওনা হলাম। ওরা আসবে সিনজিতে। ওদের এই সেকরিফাইসে একটু খুশিই হলাম। কিন্তুু পরে বোঝা গেল ব্যাপারটা । সেটা এখানে ফাঁস করছি না । গন্তব্য পূর্বাচল ৩০০ ফিট। গাড়ি কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে নেমে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ভিতর দিয়ে যাচ্ছে। রাস্তার দু’পাশের আইল্যান্ডে অনেক কাঁশফুল ফুঁটেছে। গাড়ি এসে বসুন্ধরার পকেট গেটে থামলো। উবারের গন্তব্য এখানেই শেষ। এখান থেকে রিজার্ভে ট্যাম্পু যায় মাটির ঘর রেস্টুরেন্টে। রিজার্ভ ভাড়া ৪৫০ টাকা। সাথে পরিবারবর্গ থাকায় ট্যাম্পু নিলাম না । তাছাড়া আমার সহযাত্রী রাহা ও অভি আমাদেরকে অতিক্রম করে ইতিমধ্যে কাঞ্চন ব্রীজের দিকে চলে গেছে। এদিকে উবারের ড্রাইভার মাটির ঘর রেস্টুরেন্ট পর্যন্ত যেতে রাজি হলো। শর্ত হলো এই গাড়িতেই ব্যাক করতে হবে। কি আর করা, আবার গাড়িতে চাপলাম। কাঞ্চন ব্রীজের কাছাকাছি এসে হাতের বায়ের রাস্তা ধরে চললাম। কোলের উপর ফোনে গুগল ম্যাপ খোলা । গাড়ি এগিয়ে চলল গাজীপুরের দিকে,ঢাকা ডাইভারশন রোড ধরে। রাস্তায় জ্যাম । লক-ডাউনের পরে বের হয়েছি-জ্যামও মধুময় লাগছে। আমাদের সামনে রাহাদের সিনজি । ওরা ফাঁক-ফোঁকর দিয়ে আমাদের আগেই পৌঁছে গেল।
নিজস্ব গাড়ি থাকলে ভালো । লোকজন বেশী হলে মাইক্রোবাস ভাড়া করেও আসতে পারেন।
ছুটির দিনে বেশ ভীড় হয়। দুপুর ১২ টা থেকে ১.৩০ এর মধ্যে যেতে পারলে ভালো । আসন পাবেন সহজেই। নাহলে অন্যদের ঘাড়ের পিছনে দাড়িয়ে থেকে অন্যের খাদ্য গ্রহণ দেখতে হবে। প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন আবির ভাইয়ের সংগে ( জনাব আবির -01716883120 * ) । উনি আপনার নাম লিখে রাখবে কিন্তুু দেরী হলে খাবার কিংবা আসনের নিশ্চয়তা প্রদান করবেন না।
*এই নম্বরেই আমি যোগাযোগ করেছি-নম্বর পরিবর্তন হতে পারে বা বন্ধ থাকলে-আমার কোন দোষ দেবেনা ভাই-বোন ও ভাবীরা।
0 Response to "‘মাটির ঘর’(Matir Ghor Restaurant,Gazipur) -এ দ্বি-প্রহরের খাদ্য ও প্রকৃতি বিলাস"
Post a Comment